বিআইজিডি ও ভয়েস ফর রিফর্মের গবেষণা
বিএনপিকে সমর্থন অনিশ্চিত, তবে পদযাত্রার পর এনসিপির সমর্থন বাড়তে পারে

দেশের অধিকাংশ নাগরিক মনে করেন, নির্বাচনের আগে বিভিন্ন খাতে জরুরি সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। আইন-শৃঙ্খলা, অর্থনীতি, শিক্ষা, দুর্নীতি দমন ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা সংস্কারকে তারা সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। এছাড়া ২৫ শতাংশ মানুষ নির্বাচন পেছাতে চান, বাকিরা দ্রুত আয়োজনের পক্ষে। আগামী নির্বাচনে ভোটদানের ক্ষেত্রে বিএনপিকে সমর্থন কিছুটা অনিশ্চিত, তবে পদযাত্রার পর এনসিপির সমর্থন বাড়তে পারে। এমন চিত্র উঠে এসেছে সম্প্রতি পরিচালিত এক জাতীয় জরিপে।
জরিপে বলা হয়েছে, জনগণের প্রত্যাশা শুধু নির্বাচন নয়; বরং নির্বাচন-পূর্বে আইন-শৃঙ্খলা, অর্থনীতি, দুর্নীতি দমন ও শিক্ষা খাতে কার্যকর সংস্কার বাস্তবায়নই তাদের আস্থার মূল শর্ত।
সোমবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁও জাতীয় আর্কাইভ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘ডিআইজিডি পালস সার্ভে’-এর গবেষণা পেপার উন্মোচন অনুষ্ঠানে এই জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) ও ভয়েস ফর রিফর্ম যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘ডায়রিজ অব রেড জুলাই’ এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। ভয়েজ ফর রিফর্মের কো-কনভেনার এ কে এম ফাহিম মাশরুরের সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বিআইজিডি'র সিনিয়র গবেষণা ফেলো ড. মিরাজ এম হাসান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. আসিফ শাহান। স্বাগত বক্তব্য দেন বিআইজিডি'র অপারেশনস, স্ট্র্যাটেজী অ্যান্ড পাটনারশিপ ডিরেক্টর মেহনাজ রাব্বানী।
গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন বিআইজিডি'র গবেষণা ফেলো সৈয়দা সেলিনা আজিজ। তিনি জানান, জরিপে অংশ নেন দেশের ৫ হাজার ৪৮৯ জন নাগরিক (১ থেকে ২০ জুলাই)। এর মধ্যে ৫১ শতাংশ বলেছেন— ‘সম্পূর্ণ সংস্কার শেষে নির্বাচন’ হওয়া উচিত। ১৭ শতাংশ মনে করেন, কিছু জরুরি সংস্কারের পর নির্বাচন হতে পারে; ১৪ শতাংশ চান সংস্কার ছাড়াই সরাসরি নির্বাচন। ১৩ শতাংশের এ বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই এবং ৮ শতাংশ মন্তব্য করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
তিনি আরও জানান, জনগণ সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন, আইন-শৃঙ্খলার উন্নয়ন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অসহিষ্ণুতা কমানো ও নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারে। এ ছাড়া নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ, বেকারত্ব হ্রাস, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক সংস্কার, দুর্নীতি দমন, সাংবিধানিক ও পুলিশ সংস্কারকেও জরুরি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ড. মিরাজ এম হাসান বলেন, ‘দীর্ঘদিন সাধারণ মানুষ অর্থনীতি ও রাজনীতিকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। এবার দেখা যাচ্ছে—নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় হলে মানুষ আইন-শৃঙ্খলা ও অন্যান্য বিষয়ে মনোযোগ দেয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে, বিশেষ করে মব নিয়ন্ত্রণে। শেখ হাসিনার আমলে তৈরি হওয়া ভয়ের সংস্কৃতি এখন আর নেই এবং তা ফেরানো সম্ভব নয়। নারীর অধিকার রক্ষায় সমর্থন বেড়েছে।’
ড. আসিফ শাহান বলেন, ‘আগে ধারণা ছিল—অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হলে দেশ খারাপ হয়। কিন্তু এবার অর্থনীতি তুলনামূলক ভালো থাকলেও মানুষ দেশকে ভালো মনে করছে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। নারীরা ভোট ও রাজনৈতিক আলোচনায় পিছিয়ে আছে—কোনো দল তাদের সামনে তুলে ধরছে না।’
সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মানুষ সংস্কার চায় নিজের অভিজ্ঞতা থেকে। পুলিশ, অর্থনীতি ও শিক্ষা খাতে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আস্থা কমে গেছে, কারণ নির্বাচনের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পরে বাস্তবায়িত হয় না।’
মন্তব্য
সর্বশেষ সংবাদ
আরও পড়ুন

প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৫ | ০৯:০৩

প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৫ | ০৭:৪১

প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৫ | ০৫:৩৪

প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৫ | ০৩:৩৮

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৫ | ০৮:৩৪

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৫ | ০৬:০৩