স্বামীর নামের জায়গায় নয়, C/O 'কেয়ার অব' দিয়ে নিজের নাম লিখেন সারোয়ার তুষার

স্বামীর নামের জায়গায় নয়, C/O 'কেয়ার অব' দিয়ে নিজের নাম লিখেন সারোয়ার তুষার

সম্প্রতি এনসিপির সদস্য দাবিদার নীলা ইস্রাফিল একটি মেডিকেলে ভর্তির ফর্ম ফেসবুকে তুলে ধরেছেন যেখানে তিনি দাবি করেছেন সারোয়ার তুষার তার স্বামীর নামের জায়গায় নিজের নাম লিখে দিয়েছেন। কিন্তু লাল বৃত্ত একে দেওয়া ঘর দেখে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে সেখানে পিতা অবলিক স্বামীর নামের ঘরে C/O দিয়ে নিজের নাম লিখে দিয়েছেন তুষার। এটি কোনভাবেই প্রমাণ করে না তিনি স্বামীর নামের জায়গায় সারোয়ার লিখেছেন। 

অথচ সূক্ষ্মভাবে নীলা এটি এমনভাবে তুলে ধরেছে যেন এটিই সত্য ঘটনা। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন - 

"আমি নীলা ইসরাফিল। ওই দিন আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম, সম্পূর্ণ অজ্ঞান অবস্থায়। আমার নিজের নাম, পরিচয়, জীবনের সিদ্ধান্ত সবকিছুর ওপর তখন আমার কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। আর ঠিক সেই সুযোগেই সারোয়ার তুষার আমার স্বামীর নামের জায়গায় নিজের নাম বসিয়ে দিয়েছে। এটা কোনো “ভুল” নয়, এটা আইনগতভাবে জালিয়াতি। বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারায় স্পষ্টভাবে বলা আছে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহারযোগ্য নথি মিথ্যা তথ্য দিয়ে তৈরি করা এবং তা ব্যবহার করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়া বাংলাদেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে অনুমতি ছাড়া কারো ব্যক্তিগত তথ্য পরিবর্তন করাও অপরাধ। আমার অনুমতি ছাড়া আমার পারিবারিক পরিচয় বিকৃত করা মানে শুধু আমার সামাজিক সম্মানকে আঘাত করা নয় এটা আমার মানবাধিকার লঙ্ঘন। UDHR-এর (Universal Declaration of Human Rights) ধারা ৩, ৫, ১২ ও ২২ অনুযায়ী আমার ব্যক্তিগত মর্যাদা, গোপনীয়তা এবং আইনি নিরাপত্তার অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে। হাসপাতালের নথিতে এই ভুয়া তথ্য ভবিষ্যতে আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার হতে পারে, আমার সামাজিক ও আইনগত নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং দাবি করছি
অবিলম্বে ঘটনার তদন্ত করা হোক
দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনের সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হোক, আমার প্রকৃত তথ্য পুনঃস্থাপন করা হোক
এবং রোগীর অসহায় অবস্থার সুযোগ নিয়ে যারা এমন অপরাধ করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করা হোক এটা শুধু আমার লড়াই নয়, এটা প্রতিটি মানুষের নিজের পরিচয়, মর্যাদা এবং অধিকারের জন্য লড়াই।"

এর জবাবে সারোয়ার তুষার লিখেন -

নীলা ইস্রাফিল মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আমাদের অফিসে এসেছিলেন। আমরা পুলিশ ডেকেছিলাম এবং তার পরিচিত মানবাধিকার এক্টিভিস্ট জনাব লেনিন ভাইকে ডেকেছিলাম। পুলিশের উপস্থিতিতে লেনিন ভাইসহ তাকে আমরা হাসপাতালে ভর্তি করি।
এই ভর্তি ফরমে কি লেখা হচ্ছে তা তখন খেয়াল করি নাই। এখন দেখা যাচ্ছে এটা সোশ্যাল মিডিয়ায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সার্কুলেট করা হচ্ছে।
হাসপাতালের ভর্তি ফরমের ফর্মালিটিজের কথা আপনারা সবাই জানেন। নারীর ক্ষেত্রে স্বামী/পিতার নাম লিখতে হয়। অথবা যিনি নিয়ে এসেছেন তার নাম লিখতে হয়। এখানে পরিস্কারভাবে দেখা যাচ্ছে care of অর্থে C/O লেখা যেটা লাল দাগের মধ্য দিয়ে ঢেকে ফেলা হয়েছে এবং প্রচার করা হচ্ছে আমি নাকি স্বামীর ঘরে নিজের নাম লিখেছি। আমি কি পাগল? বাটপারির একটা সীমা থাকা দরকার!
হাসপাতালে পেশেন্ট যখন আপনি ভর্তি করবেন তখন পিতা বা স্বামীর নাম না জানলে (মনে করেন রোড অ্যাক্সিডেন্ট বা এমন কিছুতে যখন অচেনা অজানা লোকেরা হাসপাতালে যায়া ভর্তি করে দিয়ে আসে) তখন C/O লিখে যে ভর্তি করসে তার নাম লেখা হয়। এটা হাসপাতালে ভর্তি এক অতি সাধারণ রীতি।
এসব বাটপারি বন্ধ করতে হবে।

নীলা ইস্রাফিলের সাম্প্রতিক স্ট্যাটাসে প্রতীয়মান হয় তিনি রাগ কিংবা ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে তথ্যের বিকৃতি ঘটাচ্ছেন। 


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ


আরও পড়ুন