৬ মাসে ঢাকাতেই অন্তত ১২১ খুন: বাড়ছে চাঁদাবাজি-ছিনতাই

সারাদেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ছিনতাই, চাঁদাবাজি। ঘটছে খুনের ঘটনাও। গেল ৬ মাসে ঢাকাতেই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন অন্তত ১২১ জন। এসবের কারণ হিসাবে, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার না হওয়াকে দুষছেন অনেকে। বিশ্লেষকদের মতে, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করছে একটি পক্ষ, যারা নির্বাচনকে ব্যাহত করতে চান।
সম্প্রতি রাজধানী গুলশানে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদা চাইতে যান ৫ যুবক। তাদের ধরা হয় হাতেনাতে। তদন্ত শুরুর পর দেখা যায়, চাঁদাবাজদের একজন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রিয়াদ। তারা ১৭ জুলাইও সেই বাসা থেকে চাঁদা নেয়। কথা ছিল কয়েক কিস্তিতে টাকা নেবেন তারা। কিন্তু দ্বিতীয় কিস্তি নেওয়ার সময় তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এমন নানা প্রভাব ও অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে রাজধানীসহ সারা দেশে বেড়েছে চাঁদাবাজির ঘটনা। গেল মাসে শুধু ডিএমপিতেই চাঁদাবাজির ঘটনায় মামলা হয়েছে ৫৯টি। যা উদ্বিগ্ন করছে রাজধানীবাসীকে।
সাধারণরা বলছেন, কোনো তোয়াক্কা নেই, পুলিশ-প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয় না। তারা তাদের মতো চলছে, এজন্য ছিনতাই, রাহাজানি বাড়ছে। আমরা নিজেরাই আতঙ্কিত এখানে দল বা সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতেছে। সেটা খুবই দুঃখজনক, আমরা এ থেকে পরিত্রাণ চাই।
শুধু কী চাঁদাবাজি? সাম্প্রতিক খুনের ঘটনাগুলোও আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে জনমনে। তথ্য বলছে, গত ৬ মাসে রাজধানীতে খুনের ঘটনা হয়েছে অন্তত ১২১টি।
অভিযোগ আছে, এসব খুন ও চাঁদাবাজিতে বিভিন্ন থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ব্যবহৃত হচ্ছে। লুট হওয়া অন্তত ১৮৯৮টি অস্ত্রের মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ১২৩৮টি। এখনও বেহাত ৬৬০টি বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র। গোলবারুদের তথ্যটাও চমকে দেওয়ার মতো।
ডিএমপির ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার থেকে আরম্ভ করে অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছি। রাজধানীর অপরাধ স্থিতিশীল রাখার জন্য আমাদের যে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ কৌশল সেটা অনেকটা কার্যকর হচ্ছে বলেই অপরাধ অনেকটা স্থিতিশীল রয়েছে। আশা করি সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরও উন্নতি হবে।
দেশব্যাপী খুন, চাঁদাবাজি আর ছিনতাই বৃদ্ধি ভাবাচ্ছে অপরাধ বিশ্লেষকদেরও। এসব ঘটনা নির্বাচন পেছানোর ইন্ধন হতে পারে বলেও মনে করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হক।
অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক বলেন, যদি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়, নানা কেন্দ্রিক অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি হওয়ার মধ্য দিয়ে যদি অস্থিরতা থাকে এবং সেই অস্থিরতা যদি নাগরিকদের মনে বা ভোটারদের মনে কোনো কোনোভাবে শঙ্কা বা আতঙ্ক কাজ করে, তখনই এ অপরাধ বাস্তবতা বা পরিস্থিতি কিন্তু নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করবে। এবং সেটি নির্বাচন সুস্থ হওয়ার প্রশ্নে নানা ধরনের প্রসঙ্গ সে তৈরি করবে। এ সময় দ্রুত পুলিশকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানালেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক।
মন্তব্য
সর্বশেষ সংবাদ
আরও পড়ুন

প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৫ | ০৮:৫৪

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৫ | ০৪:২৩

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৫ | ০৪:১৯

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৫ | ০২:৫৬

প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৫ | ০৩:১১

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫ | ০৮:০০