ভোলাগঞ্জ থেকে লুট হওয়া সব পাথর আগের জায়গায় ফেলতে নির্দেশ হাইকোর্টের

ভোলাগঞ্জ থেকে লুট হওয়া সব পাথর আগের জায়গায় ফেলতে নির্দেশ হাইকোর্টের
পাথর লুট হওয়ার পর সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র। মঙ্গলবার সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে।

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ থেকে লুট হওয়া সব ধরনের ‘সাদাপাথর’ স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় উদ্ধার করে ৭ দিনের মধ্যে আগের জায়গায় প্রতিস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের তালিকা প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে হবে।

বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকা সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার রুলসহ এ আদেশ দেন।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে রিটটি করেন ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী। আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী সঞ্জয় মণ্ডল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নুর মোহাম্মদ আজমী। 

এছাড়া সাদাপাথর লুটপাটের সঙ্গে জড়িতদের তালিকা তৈরি করে দুই মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে সিলেট জেলা প্রশাসন, বিজিবি, র‌্যাবসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে পরিবেশগত কী পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করতে পরিবেশ সচিব ও খনিজ সম্পদ সচিবকে আগামী সাত দিনের মধ্যে বুয়েটের একজন অধ্যাপককে নিয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। 

দিনরাত পাথর যেন কেউ অপসারণ করতে না পারে স্থানীয় প্রশাসন ও বিবাদীদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মনিটরিং টিম গঠন করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

আদেশের পর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সাদাপাথর গায়েব-সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রছায়ায় পাথরগুলো নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যার মূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা। ওই জায়গাটি এনভায়রনমেন্টালি ক্রিটিক্যাল স্থান হিসেবে বিবেচিত এবং হাজার হাজার মানুষ এখানে পর্যটনে আসে। পরিবেশ আইনের ৫ ধারায় এ স্থান ক্রিটিক্যাল এরিয়া ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করা করা হয়।

তিনি বলেন, দিনে-দুপুরে এভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ লুটপাটের ঘটনা গ্রহণযোগ্য নয়। এটি সংবিধান অনুসারে সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে।

মনজিল মোরসেদ আরও বলেন, ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর উত্তোলন ও অপসারণ নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না; সাদাপাথর এলাকা সংরক্ষণের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না; ওই এলাকাকে পরিবেশ আইনের ৫ নম্বর ধারা অনুসারে ইকোলজিক্যাল এরিয়া ঘোষণার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং পরিবেশের ক্ষতির সমপরিমাণ অর্থ দায়ীদের কাছ থেকে আদায়ের জন্য কেন আদেশ দেওয়া হবে না, তা জানাতে ৪ সপ্তাহের রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

এদিকে, ভোলাগঞ্জ থেকে সাদাপাথর লুটের ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বুধবার করা একটি রিট শুনানির জন্য আগামী রোববার দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ